কোম্পানী রেজিস্ট্রেশন এর জন্য কোম্পানী আইন অনুযায়ী অথোরাইজইড ক্যাপিটাল (অনুমোদিত মুলধন) এবং পেইড আপ ক্যাপিটাল (পরিশোধিত মুলধন) নির্ধারন করতে হয়। কিন্তু এই দুটি আসলে কি সে বিষয়ে আমাদের অনেকেরই স্পষ্ট ধারনা নেই। চলুন আজ আপনাদেরকে সহজ ভাবে এই দুটি বিষয় বোঝানোর চেস্টা করি।
কোম্পানীতে আপনি যেই টাকা বিনিয়োগ করবেন সেই টাকাকেই আমরা মুলধন বলে থাকি। কোম্পানীর ক্ষেত্রে এই মুলধন বা টাকার অংক কে শেয়ার এ কনভার্ট করা হয়। এবং কোম্পানী সবোর্চ্চ কতটাকার শেয়ার তার শেয়ারহোল্ডারদের কে ইস্যু করতে পারবে এটা হলো সেই লিমিট। অর্থাৎ আপনি সবোর্চ্চ কত টাকার শেয়ার শেয়ারহোল্ডারদেরকে ইস্যু করতে চান তা নিজেই নির্ধারন করে সরকারের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে নিলেন। অনুমোদন যদি ১ কোটি টাকার নেন তাহলে আপনি সবোর্চ্চ ১ কোটি টাকারই শেয়ার আইন অনুযায়ী ইস্যু করতে পারবেন এর বেশী করতে হলে আপনাকে পুনরায় আবারও অনুমোদন নিতে হবে এবং সেই অনুযায়ী সরকারকে ফি পরিশোধ করতে হবে। কোম্পানী গঠনের সময় মেমোরেন্ডাম এবং আটির্কেল অফ এসোসিয়েশনে এই অথোরইজইড ক্যাপিটাল এর পরিমান উল্লেখ করতে হয় এবং সেই অনুযায়ী সরকারকে নির্ধরিত ফি পরিশোধ করতে হয়। এই অথোরইজইড ক্যাপিটাল নির্ধারনের ক্ষেত্রে আইনে কোন সর্বনিন্ম বা সবোর্চ্চ সীমারেখা নেই। আপনি আপনার ব্যবসার ভবিষৎ এর কথা চিন্তা করে যে কোন পরিমান টাকা অথোরইজইড ক্যাপিটাল হিসেবে নির্ধারন করতে পারবেন।
কোম্পানী গঠনের সময় আপনাকে অথোরইজইড ক্যাপিটাল এর সম্পুর্ন শেয়ার ইস্যু করতে হবেনা। আপনি চাইলে এই অথোরইজইড ক্যাপিটাল এর যে কোন অংশ ভবিষ্যৎ এ ইস্যুর জন্য ইস্যুবিহীন অবস্থায় রাখতে পারবেন।
অুনমোদিত মুলধন কে শেয়ার এ রূপান্তর করে যত টাকার শেয়ার আপনি কোম্পানীর নিকট থেকে প্রাথমিক ভাবে ক্রয় করলেন সেটাই হলো আপনার পরিশোধিত মুলধন বা পেইড আপ ক্যাপিটাল। মানে আপনি কোম্পানীকে সেই টাকা পরিশোধ করে দিলেন।
উদাহরনঃ মনে করূন আপনি ১ কোটি টাকা অথোরইজইড ক্যাপিটাল নির্ধারন করলেন। এবং আপনার কোম্পানীর শেয়ারহোল্ডার বা পরিচালক মোট ২ জন। এই ক্ষেত্রে এই ১ কোটি টাকা হলো কোম্পানীর মুলধন। এবার আপনাকে এই ১ কোটি টাকাকে শেয়ারে রূপান্তর করতে হবে। সেই জন্য আপনারা ২ জন শেয়ারহোল্ডার মিলে ঠিক করলেন প্রত্যেকটি শেয়ার এর মুল্য বা ফেস ভ্যালু হবে ১০০ টাকা তাহলে।
১০০,০০,০০০ (১ কোটি)/ ১০০ (একশ টাকা ফেস ভ্যালূ/ প্রতি শেয়ার এর মুল্য)= ভাগ করলে মোট ১০০০০০ এক লক্ষ শেয়ার হয়।
এখন কোম্পানী যখন আপনারা শুরু করবেন স্বাভাবিক ভাবেই এতটাকা নিয়ে সবাই ব্যবসা শুরূ করেনা। প্রাথমিক ভাবে ধরে নিন আপনাদের কাছে ৫ লক্ষ টাকা করে দুইজনের কাছে ১০ লক্ষ টাকা আছে তাহলে
১০ লক্ষ্য/ ১০০(একশ টাকা ফেস ভ্যালূ/ প্রতি শেয়ার এর মুল্য)= ভাগ করলে = মোট ১০,০০০ দশ হাজার শেয়ার হয়। তার মানে আপনাদের কাছে যেহেতু এই মুহুতের্ এই ১ লক্ষ্য শেয়ার ক্রয় করার টাকা নেই তাই আপনারা প্রাথমিক ভাবে প্রত্যেকে ৫০০০ হাজার করে দুইজনে ১০,০০০ হাজার শেয়ার ক্রয় করলেন কোম্পানীর কাছ থেকে। এবং বাকী ৯০,০০০ হাজার শেয়ার কেম্পানীর কাছে রিজার্ভ এখনও রয়ে গেলো। আপনি চাইলে ভবিষৎ এ কোম্পানীর কাছ থেকে নিজে অথবা অন্য কারো কাছে আরো এই রিজার্ভ শেয়ার ক্রয় বা বিক্রয় করতে পারবেন।
তার মানে আপনাদের পরিশোধ করা এই ১০ লক্ষ টাকা বা ১০,০০০ (দশ হাজার টাকা) হলো আপনাদের পরিশোধিত মুলধন বা পেইড আপ ক্যাপিটাল। এবং ১ কোটি টাকা বা ১ লক্ষ শেয়ার হলো কোম্পানীর অনুমোদিত মুলধন।
আর আপনাদের এই অপরিশোধিত মুলধন হলো ৯০,০০০ নব্বই হাজার শেয়ার)। যা ভবিষৎ এ আপনারা নিজেরা ক্রয় করে কোম্পানীতে আপনার মালিকানার অংশ বাড়াতে পারবেন। অথবা অন্য কারো কাছে এই কোম্পানীর শেয়ার বিক্রি করে কোম্পানীর জন্য পুজি বা বিনিয়োগ সংগ্রহ করতে পারবেন।