বায়না দলিল বাতিল করার নিয়মটি যদি না জানা না থাকে তাহলে জেনে নিন আজকের লেখা থেকে। সম্পত্তি হস্থান্তর আইন অনুযায়ী বায়নার মেয়াদ থাকাবস্থায় বায়নাকৃত স্থাবর সম্পত্তিকে বায়না গ্রহীতা ব্যতীত অন্য কাহারো নিকট বিক্রয় করা যায়না । যতক্ষন না বায়না দলিলটি আইনসম্মত ভাবে বাতিল করা না হয়। অনেক সময় জমি বা ফ্ল্যাট এর ক্রেতা সময় মতো টাকা জোগার করতে না পারলে এই ধরনের সমস্যার সৃষ্টি হয়ে থাকে। বায়না করার পর তা যত দ্রুত সম্ভব রেজিস্ট্রেশন করে নেয়াটা ক্রেতার জন্য ভবিষ্যত সমস্যা এড়াতে সাহায্য করে। তাই হাতে জমি ক্রয়ের পুরো টাকার ব্যবস্থা নিশ্চিত করেই বায়না করা উচিত। অনেক সময়ই আমরা অতি উৎসাহী হয়েই আসল টাকার যোগাড় না করেই অল্প টাকাতে বায়না করে ফেলি যা মোটেও উচিত নয়।
ক্রেতা বিক্রেতা উভয়েই বায়না চুক্তি বাতিলের ক্ষেত্রে রাজী থাকলে এই প্রক্রিয়াটা অনেকটাই সহজ হয়। কিন্তু উভয়পক্ষ যদি বায়না চুক্তিটি বাতিলের জন্য রাজি না থাকে তবে কাজটি একটু কঠিন হয়ে যায়। যদি জমির ক্রেতা ও বিক্রেতা বায়না চুক্তিটি বাতিলের জন্য রাজি হয়, এক্ষেত্রে উভয়কে একত্রে সংশ্লিষ্ট সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে গিয়ে পূর্বের বায়না দলিলটি বাতিলের জন্য নতুন করে একটি দলিল করতে হবে। উক্ত দলিলে দাতা এবং গহীতা উভয়ে স্বাক্ষর দিয়ে দলিলটি রেজিস্ট্রি করিয়ে নিতে হবে। তাহলেই উক্ত বায়না চুক্তিটি বাতিল হয়ে যাবে।
জমির ক্রেতা চুক্তিটি বাতিলের জন্য রাজী না থাকে। এক্ষেত্রে জমির বিক্রেতা প্রথমে আইনজীবীর কাছে গিয়ে উক্ত বায়না দলিলের ক্রেতা বরাবর একটি উকিল নোটিশ দিবেন। উক্ত নোটিশে ক্রেতাকে বায়না দলিলের অবশিষ্ট টাকা পরিশোধের জন্য কয়েকদিন সময় দিতে পারেন এবং আরো উল্লেখ করতে হবে যে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যদি বকেয়া টাকা পরিশোধ না করে তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে। যদি উকিল নোটিশ প্রাপ্তির পর ক্রেতা সময় মতো টাকা পরিশোধ করে জমি রেজিস্ট্রি করে নেয় তাহলে ভাল। তা না হলে বিক্রেতা আদালতে গিয়ে যথাযথ কারণ দেখিয়ে বায়না চুক্তি বাতিলের মামলা করতে পারে। আদালত সবকিছু দেখে সন্তুষ্ট হলে উক্ত বায়না চুক্তিটি বাতিল করে দিবে আবার এক সঙ্গে আদালতে জমির বিক্রেতার ক্ষতিপূরণ হিসাবে বায়না চুক্তির টাকা বিক্রেতার কাছে রেখে দেওয়ার আদেশ দিতে পারে। আদালত থেকে বায়না চুক্তিটি বাতিলের রায় পাওয়ার পর জমির মালিক পুনরায় জমিটি অন্য ব্যক্তির কাছে বিক্রি করতে পারবেন।